জামাতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কসাই
রাজাকার আবদুল কাদের মোল্লা
রাজাকার আবদুল কাদের মোল্লা
রাজাকার ইনফো: ১৯৭১ সালে ঢাকার মিরপুর এলাকার মানুষদের কাছে আবদুল কাদের মোল্লা একজন কসাই হিসেবে পরিচিত ছিল। সে সময় মিরপুরে ভারত থেকে আগত বিহারী মুসলমানদের আধিক্য ছিল, এই বিহারীরা বাংলাদেশে পাকিস্তানি শাসনের প্রতি সমর্থক ছিল।
পাকিস্তানি বাহিনী ও তার সহযোগীদের হাতে নৃশংসভাবে নিহত মানুষদের অন্যতম বৃহৎ গণকবর ¯^vaxbZvi পর মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় আবিষ্কৃত হয়। মিরপুর এলাকার স্থানীয়দের মতে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মিরপুর এলাকার শিয়ালবাড়ী এবং রূপনগরে হাজার হাজার বাঙালি হত্যায় কসাই আবদুল কাদের মোল্লা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল। তাদের অনেকেই নিশ্চিত করেছিল যে, সেনাবাহিনী তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করার আগেই জল্লাদ কাদের মোল্লা তার হত্যার তাণ্ডব শুরু করে।
৬ই মার্চ মিরপুর ৬নং সেক্টরের সিরামিক ইন্ডাস্ট্রির গেট-এর সামনে বাঙালিদের দাবি পেশ করার জন্য একটি জনসমাবেশ আয়োজন করা হয়। যখনই মানুষ জাতীয় শেস্নাগান দেয়া শুরু করল, সভায় উপস্থিত শহিদুর রহমান, কাদের মোল্লা এবং তার বাহিনী তলোয়ার এবং অন্যান্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে সভায় আক্রমণ করে। (তথ্যসূত্র-প্রথম আলো বস্নগ)
মিরপুর ১নং সেক্টরের বি-ব্লক নিবাসী ফিরোজ আলীর মতে, কসাই কাদের মোল্লা ফিরোজ আলীর ভাই ১৮ বছরের ছাত্র পল্লব টুনটুনি হত্যার সাথে জড়িত ছিল। কিশোর টুনটুনি জাতীয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সক্রিয় সমর্থক ছিল এবং সে কারণে তার নাম কসাই কাদের মোল্লার হত্যা তালিকায় যোগ হয়। ২৯শে মার্চ কসাই মোল্লার ঘাতক দল শহরের অন্য প্রান্ত থেকে টুনটুনিকে অপহরণ করে এবং তাকে মিরপুরে নিয়ে আসে। এরপর ছেলেটিকে হাত পেছন থেকে বাঁধা অবস্থায় টেনে-হিঁচড়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে আসা হয় এবং আবার ফেরত নেয়া হয়। একটি বড় মাঠে তাকে গাছের সাথে বেঁধে দুইদিন ফেলে রাখা হয়। পরে জল্লাদ কাদের মোল্লার লোকেরা ফিরে আসে এবং ছেলেটির আঙ্গুল কেটে ফেলে। ৫ই এপ্রিল অপহরণের এক সপ্তাহ পরে জল্লাদ কাদের মোল্লা টুনটুনিকে গুলি করে হত্যা করার জন্য তার লোকদের নির্দেশ দেয়। ফিরোজ আলী বলেন, গণকবরে আরো ৭টি লাশের সাথে নিক্ষেপ করার আগে এলাকার অন্যদের জন্য সতর্কতার নির্দশন হিসেবে ছেলেটির লাশ সেই গাছের সাথে দুইদিন ঝুলিয়ে রাখা হয়। (তথ্য সূত্র- প্রথম আলো বস্নগ)
মুহম্মদ শহীদুর রহমান চৌধুরী ছিলেন ১৯৭১ সালে কসাই কাদের মোল্লার অপরাধ কার্যক্রমের আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, অক্টোবরে রাজাকারবাহিনী জল্লাদ আব্দুল কাদের মোল্লার নির্দেশে মিরপুর ৬নং সেক্টরে মহিলা কবি মেহেরুন্নেসাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তিনি বলেন, সিরাজ নামের এক ব্যক্তি, যিনি কবির ঘরে থাকতেন, তিনি হত্যাকাণ্ডের এই দৃশ্য দেখে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। জনাব চৌধুরী আরো বলেন যে, সিরাজ এখনও মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে।
মিরপুর এলাকার অধিবাসীদের আরো অভিযোগ আছে যে, কসাই আব্দুল কাদের মোল্লা মিরপুরের মনিপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়ার অবাঙালি লোকদেরকে তার আদেশাধীন সশস্ত্র বাহিনীতে সংগঠিত করে। ঐসব বিহারী সশস্ত্র বাহিনীর সাহায্যে কসাই আব্দুল কাদের মোল্লা মিরপুরের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হাজার হাজার বাঙালি হত্যাকা- সংঘটিত করত। (তথ্যসূত্র-প্রথম আলো বস্নগ)