Character of Razakar & Jamat

জামাতে মওদুদীর ভেলকিবাজি
রাজাকার ইনফো: বাংলাদেশে ধর্মব্যবসায়ী মৌলবাদী জঙ্গিবাদী হিসেবে পরিচিত জামাতে মওদুদী সংগঠন ও এর নেতাদের সঙ্গে আফগানিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন তালেবান ও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মৌলবাদী জঙ্গিবাদীদের মধ্যে খুব বড় একটা পার্থক্য নেইবাংলাদেশে জামাতে মওদুদী এবং এদের মতো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কোন দৃঢ় আদর্শ নেইতবে ঘোষিত আদর্শ অবশ্যই আছে, কিন্তু বাস্ত বতায় সে রকম কিছু নেইএরা সুবিধাবাদী এবং সে কারণে এদের দ্বারা অনেক কিছুই সম্ভব এবং অনেক কিছুই হয়ে থাকে; যার ফলে বোঝা যায় যে, এরা সুবিধাবাদী এবং অসৎনিজেদের দলীয় ¯^v‡_©i কারণে এরা এমন সব কাজ করে থাকে যার সঙ্গে এদের ঘোষিত আদর্শগত অবস্থানের সম্পর্ক অতি সামান্য অথবা নেই বললেই চলে
এরা কাট্টা মিথ্যাবাদীভাষা আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় এদের নিজেদের ভূমিকা নিয়ে যে প্রচারণা এরা শুরু করেছে তার মাধ্যমে এদের জঘন্য মিথ্যাবাদিতা ও প্রতারক চরিত্র এরা নিজেরাই জনগণের কাছে এখন তুলে ধরছেবিষয়টি চরিত্রের দিক দিয়ে এত কদর্য যে, এর উল্লেখ করা এক বড় সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব
গত শতাব্দীর নব্বই দশকের প্রথমদিকে যখন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে গো আযমের শাস্তি র দাবিতে আন্দোলন চলছিল, তখন ঢাকার দেয়ালে দেয়ালে কুখ্যাত ঘাতক গো আযমকে ভাষাসৈনিক হিসেবে আখ্যায়িত করে চিকা মারা হয়েছিলতবে সে সময় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে গো আযমের মিথ্যা চরিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরাও হয়েছিল
শুধু ইসলামের নাম নিয়ে অর্থাৎ ধর্ম নিয়ে ব্যবসা চালিয়েও নিজেদের রাজনৈতিকভাবে রক্ষা করা সম্ভব না হওয়ার কারণে তারা ভাষা আন্দোলনের মতো একটি স্পর্শকাতর আন্দোলনের সাথে তাদের নিজেদের সম্পর্ক জাহির করে বাঁচার চেষ্টা করেছে, করছে
প্রতারণামূলক প্রচারণার কাজ জমাতীরা হরহামেশাই করে থাকেএটা তাদের দলীয় নীতিসম্প্রতি তারা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নামে একটি ভিডিও ক্যাসেট প্রকাশ করেছেএতে সিডির কভারে লেখা আছে মাতৃভাষা বাংলা ভাষা খোদার সেরা দান সবকিছু ছেড়ে দিয়ে এরা এখন মাতৃভাষাকে খোদার সেরা দান হিসেবে জনগণের কাছে উপস্থিত করে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছেএটা তাদের ধর্মব্যবসার আরেক রূপ
যাই হোক, ক্যাসেটটিতে ভাষা আন্দোলনের উপর কিছু কথাবার্তা থাকলেও বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় হল ধর্মব্যবসায়ী জামাতের নেতা ঘাতক গুরু গো আযমের দুদফা সাড়্গাৎকার, যাতে সে নিজেকে ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় নেতা হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করেছেএই প্রচেষ্টা যে কত অসৎ ও হীন এর একটা প্রমাণ হচ্ছে, এ ক্যাসেট তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তাকারীদের  নাম নিয়ে প্রতারণাঅর্থাৎ এখানে তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণের জন্য এমন ব্যক্তির নাম ব্যবহার করেছে প্রতারক জামাতীরা, যারা কোন তথ্য দেননিএ কাজ করার উদ্দেশ্য যে এই প্রতারণাপূর্ণ ব্যাপারটির প্রামাণ্যতা নিশ্চিত করা, এতে কোন সন্দেহ নেইকিন্তু বিষয়টি সর্বৈব মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়ভাষা আন্দোলনে গো আযমের ভূমিকা সম্পর্কে প্রচার কাজে এরূপ প্রতারণার আশ্রয় নেয়া থেকে বড় ধৃষ্টতা আর কি হতে পাবে? কতখানি নৈতিক অধঃপতন ঘটলে এ কাজ কোন ব্যক্তি বা দলের  পড়্গে সম্ভব সেটা বলাই বাহুল্য
এক প্রখ্যাত কলামিস্ট তার ভাষা আন্দোলনের উপর লিখিত বইয়ের প্রথম খে- একবারই মাত্র গো আযমের উল্লেখ করেছেন১৯৪৮ সালের b‡f¤^i মাসে পাকিস্ত ানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান পূর্ব-পাকিস্তান সফরে আসেন২৭ b‡f¤^i তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এক সমাবেশে ভাষণ দেনসেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের পড়্গ থেকে তাকে একটি মানপত্র দিয়ে তাতে বাংলা ভাষাকে পাকিস্ত ানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানানো হয়এ মানপত্রটি পাঠ করে ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন সেক্রেটারি, আজকের কুখ্যাত ঘাতক, ধর্মব্যবসায়ী গো আযম
আসলে এটি পাঠ করার কথা ছিল ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি অরবিন্দ বোসের কিন্তু লিয়াকত আলীর সামনে ভাষা আন্দোলনের দাবি সংবলিত মাত্রপত্র পাঠ একজন হিন্দু ছাত্রকে দিয়ে করালে তার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে এবং মুসলিম লীগ সরকার এ নিয়ে নানা প্রকার বিরূপ প্রচার শুরু করবে- এ আশঙ্কা থেকেই একজন নামধারী মুসলমান ছাত্র হিসেবে সেক্রেটারি গো আযমকে সেটা পাঠ করতে দেয়া হয়েছিলএই হল ভাষা আন্দোলনে গো আযমের বিরাট ভূমিকা
যাই হোক, এ বিষয়টি লেখক ভাষা আন্দোলনের উপর লেখা বইটিতে ¯^vfvweKfv‡eB উল্লেখ করেছেনবইটি থেকে অন্যান্য তথ্যের মতো এ তথ্যও যে কোন লোক ব্যবহার করতে পারেকিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, গো আযমকে ভাষা আন্দোলনের একজন নায়ক হিসেবে উপস্থিত করার জন্য জামাতের এই প্রতারণাপূর্ণ প্রচেষ্টার ড়্গেত্রে তাদেরকে কোন তথ্য প্রদান করা হয়েছেআর গো আযম তখন নাস্তি ক্যবাদী কম্যুনিজমের ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে কাট্টা নাস্তি ক ছিল বলেই সেক্রেটারি পদ পায় এবং মানপত্র পাঠের সুযোগ পায়তাও আবার নামধারী মুসলমান হিসেবে, জামাতে মওদুদীর চেলা হিসেবে নয় ফলে ধার্মিক তো দূরের কথা মানুষ হিসেবেই এদের চরিত্র কত কলুষিত- এই প্রতারণা তার এক প্রামাণ্য দৃষ্টান্ত
এ তো গেল বিষয়টির একটি দিকএর অন্যদিক হল, গো আযম ভাষা আন্দোলনে (জামাতীদের ভাষায়) বীরত্বপূর্ণ ও নায়কোচিত ভূমিকা পালন করা সত্ত্বেও তাতে নিজের এই অংশগ্রহণকে সুবিধাবাদী কারণে A¯^xKvi করতেও দ্বিধারোধ করেনিআজ নয়, পাকিস্ত ানি আমলেই ১৯৭০ সালের জুন মাসে, পশ্চিম-পাকিস্ত ানের শুক্কুর শহরে এক বক্তৃতা প্রসঙ্গে এই কুখ্যাত জামাত নেতা খোদার সেরা দান বাংলা ভাষা ও ভাষা আন্দোলনের বিরোধিতা করতে গিয়ে বলেছিল, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য দুঃখিত
গো আযম ভাষা আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে গিয়ে আরো বলেছিল, উর্দু হচ্ছে এমন একটা ভাষা যার মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষার উপযুক্ত প্রচার ও প্রসার সম্ভবকারণ উর্দু পাক-ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের সাধারণ ভাষা এবং এতে তাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সম্পদ সংরক্ষিত রয়েছেনিজের ভ্রান্ত ভূমিকা সম্পর্কে খেদোক্তি করতে গিয়ে গো আযম আরও বলেছিল, বাংলা ভাষা আন্দোলন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দৃষ্টিকোণ থেকে মোটেই সঠিক কাজ হয়নি [দৈনিক আজ, ২০ জুন, ১৯৭০]
শুক্কুরে দেয়া গো আযমের এই বক্তৃতা পত্রিকায় প্রকাশের পর সাপ্তাহিক গণশক্তি পত্রিকায় এর উপর লিখা পত্রস্থ হয়েছিল[২১. ০৬. ১৯৭০ ঈসায়ী দ্রষ্টব্য]
গো আযম এসব কথা বলছিল এমন এক সময়ে যার অনেক আগে ভাষা আন্দোলনের দাবি অনুযায়ী ১৯৫৬ সালের পাকিস্তাান সংবিধানে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ¯^xK…Z হয়েছিল
দেখা যাচ্ছে, জামাত নেতা গো আযমের কথাবার্তার ভেল্কিবাজি ও নৈতিক অধঃপতনের তুলনা নেইভাষা আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের কাহিনী, তারপর ১৯৭০ সালে নিজেকে ভাষাসৈনিক হিসেবে প্রচার করা ও সম্পৃক্ততার জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং এখন আবার বাংলা ভাষাকে খোদার সেরা দান হিসেবে †MŠievwš^Z করার নামে মিথ্যায় পরিপূর্ণ ক্যাসেট বের করা- সবই হল জামাতের জাদুমন্ত্রের ভেল্কি খেলাএর সঙ্গে যে প্রকৃত ইসলামী নৈতিকতার কোন সম্পর্ক নেই একথা বলাই বাহুল্য
শুধু ভাষা আন্দোলনই নয়, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও জামাত এখন একটা জাদুমন্ত্রের ভেল্কি খেলা দেখাচ্ছে১৯৭১ সালে তারা ¯^vaxbZv যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সঙ্গে নানা চক্রান্তে লিপ্ত ছিলতারা সামরিক বাহিনীর সহায়ক শক্তি হিসেবে এমন ক্রিমিনাল কাজ নেই যা করেনি
১৯৭১এর wW‡m¤^i মাসে তারা এদেশের অনেক বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলসে সময়ে এদের অপকীর্তি ও গণশত্রুতার শেষ নেইঅথচ এরাই এখন মাঠে নেমেছে নিজেদের একাত্তরের ¯^vaxbZv যুদ্ধের সৈনিক হিসেবে প্রমাণ করার জন্যএ উদ্দেশ্যে এরা কিছুসংখ্যক বেঈমানকে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে গঠন করেছে কথিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ
এটা অবশ্যই বলা দরকার যে, জামাতীরা বিশুদ্ধ ইসলামী লাইনের বইরে এসে ভাষা আন্দোলন ও ¯^vaxbZv আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকা প্রমাণ করার চেষ্টার মূল কারণ, ইসলামের নাম ভাঙিয়ে ব্যবসা করাতে এখন আর তাদের বড় বেশি সুবিধা হচ্ছে নাএজন্য কুফরী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক, মিথ্যার ভিত্তিতে হলেও প্রচার করে এরা নিজেদের পায়ের নিচে মাটি খোঁজার চেষ্টা করছেকিন্তু যে মাটি তাদের পায়ের তলায় নেই, সেটা খোঁজ করে কোন লাভ নেইজামাতের মতো উগ্রতাবাদী জঙ্গি আদর্শের রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে অনেক আগেই ঐতিহাসিকভাবে নির্ধারিত হয়ে গেছেঅর্থাৎ এরা নিকৃষ্ট ঘাতক হিসেবে ধিকৃত হয়ে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ হবেই হবেইনশাআল্লাহ(সমাপ্ত)